মাদারীপুর জেলা, কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের সাবেক বিএনপি সাধারণ সম্পাদক জনাব তাহেরের উপর প্রকাশ্যে হামলার ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তাহের মোটরসাইকেলে চলার সময় সড়কে ওত পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী তার পথরোধ করে। ভিডিওতে স্পষ্টভাবে শোনা যায়, এক হামলাকারী বলছেন, “এই মাদারচোদ, খোকন ভাইরে গালাগালি করোস ক্যা?” এর পরপরই তাহেরের উপর সশস্ত্র হামলা হয়।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তেই জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাহেরের প্রতি রাজনৈতিক নিষ্ঠা ও ত্যাগের কথা উল্লেখ করে অনেকেই হতবাক হয়েছেন এমন একটি ঘটনার সাক্ষী হয়ে। স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রমতে, তাহের দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং দলের দুঃসময়ে বারবার নেতৃত্বে দেখা গেছে তাঁকে।
এলাকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীরা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির গণশিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনের অনুসারী এবং তাঁর নির্দেশে মাদারীপুরে একাধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়েছে। ঘটনার পর রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, এই হামলা কি শুধুই ব্যক্তিগত শত্রুতার ফল, নাকি দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের প্রকাশ?
স্থানীয় বিনপির একাধিক নেতাকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের প্রকাশ্য হামলা সাধারণত একক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে ঘটে না, বরং এটি দলের ভেতরের ক্ষমতার দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে। তাহেরের মতো এক ত্যাগী নেতার উপর হামলা তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—যারা দলের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত?
এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় বিএনপি বা খোকনের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে, ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, খোকন নিজেই এই হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ ঘটনার পর মাদারীপুরে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, একজন নেতাকে রক্তাক্ত করার মাধ্যমে শুধু এক ব্যক্তি নয়, ত্যাগ ও বিশ্বাসের রাজনীতি আহত হয়েছে। স্থানীয়রা দাবি জানিয়েছেন, এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যথায়, মাদারীপুরে বিএনপির ভবিষ্যত নেতৃত্ব সংকটে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হচ্ছে।