ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীন। তবে এবার বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে দেশটির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির পরিমাণ চীনের চেয়ে মাত্র ৩২ কোটি ডলার কম।
ইইউর পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৩ হাজার ২৪৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। এই সময়ে চীন ৮৩৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ৮০৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি।
ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি চীনের তুলনায় পিছিয়ে ছিল। তবে ২০২৩ সালে চীনের রপ্তানি ছিল ২ হাজার ৫৪১ কোটি ডলার এবং বাংলাদেশের ছিল ১ হাজার ৮৮৬ কোটি ডলার। ২০২৪ সালে চীনের রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬০৭ কোটি ডলারে, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ডলার। এসময় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
যদিও অর্থমূল্যে চীনের চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ, পরিমাণের হিসেবে ২০২২ সালে চীনকে টপকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই বছরে বাংলাদেশ ১৩৩ কোটি কেজি এবং চীন ১৩১ কোটি কেজি পোশাক রপ্তানি করেছিল। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ চীনের চেয়ে ২ কোটি কেজি কম রপ্তানি করলেও চলতি বছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ চীনকে পেছনে ফেলে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। এই সময় বাংলাদেশ ৪৮ কোটি কেজি এবং চীন ৩৮ কোটি কেজি পোশাক রপ্তানি করেছে।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল প্রথম আলোকে বলেন, “এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদি এই প্রবৃদ্ধি বজায় থাকে, তবে বাংলাদেশ আগামী মাসগুলোর মধ্যে চীনকে টপকে শীর্ষে চলে যেতে পারে।”
ইইউর বাজারে চীন ও বাংলাদেশের পর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক, যার রপ্তানি চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৩১০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ কম। ভারতের রপ্তানি ২০১ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ২০ শতাংশ বেশি। কম্বোডিয়া ১৫৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, এবং তাদের প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।